মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩১ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম ডেস্ক:
দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেকের প্রস্তুতি চলার মধ্যেই উত্তর কোরিয়া তাদের পূর্ব উপক‚লে সমুদ্রের দিকে ফের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রীক্ষা চালিয়ে নিজেদের শুক্তির জানান দিয়েছে। মাত্র এক সপ্তাহ আগেই উত্তর কোরিয়া ‘যত দ্রæত গতিতে সম্ভব’ পারমাণবিক শক্তিতে বলীয়ান হওয়ার অঙ্গীকার করার পর বুধবার এ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাল। দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান এই খবর জানিয়েছে। চলতি বছরে এটি উত্তর কোরিয়ার ১৪তম ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা। দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক-ইয়োল ক্ষমতা নিচ্ছেন আগামী ১০ মে তে। তার আগে দিয়ে উত্তর কোরিয়া এই অস্ত্র পরীক্ষা করল। এর আগে গত ১৬ এপ্রিলে উত্তর কোরিয়া আরেকটি নতুন ট্যাকটিক্যাল গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে। সামনের সারির দীর্ঘ পাল্লার আর্টিলারি ইউনিটের যুদ্ধে এই ক্ষেপণাস্ত্র নাটকীয়ভাবে উত্তর কোরিয়ার সামরিক শক্তি বাড়াবে বলে তখন জানানো হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর চাপের মধ্যেই একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে নিজেদের শক্তির জানান দিচ্ছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন। সিউলের জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ (জেসিএস) জানায়, বুধবার স্থানীয় সময় দুপুরের দিকে তারা উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ং এর সুনান এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের বিষয়টি শনাক্ত করতে পেরেছে। ক্ষেপণাস্ত্রটি সর্বোচ্চ ৭৮০ কিলোমিটার উচ্চতায় প্রায় ৪৭০ কিলোমিটার (২৯২ মাইল) পথ পাড়ি দিয়েছে। উত্তর কোরিয়া এর আগে গত ২৪ মার্চে এই পিয়ংইয়ং থেকেই সবচেয়ে বড় আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) হোয়াসং-১৭ উৎক্ষেপণ করার কথা জানিয়েছিল। সিউলের জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ (জেসিএস) অবিলম্বে উত্তর কোরিয়াকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ বন্ধের আহŸান জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেছে, “সা¤প্রতিক দিনগুলোতে উত্তর কোরিয়ার দফায় দফায় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা কেবল কোরিয়া উপদ্বীপই নয়, আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য বড় ধরনের হুমকি সৃষ্টি করেছে।” দক্ষিণ কোরিয়ার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট এবং ভাবি প্রেসিডেন্ট উভয়ের কার্যালয় থেকেই উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট ইয়ুনের দল উত্তর কোরিয়ার এ ধরনের কার্যকলাপের কঠোর জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। অপরদিকে, খরার মধ্যে কৃষিকাজ অব্যাহত রাখতে উত্তর কোরিয়ায় অফিসের কর্মী এবং কারখানার শ্রমিকদের গ্রামাঞ্চলে পাঠানো হয়েছে। বুধবার দেশটির সরকারি সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে। গত বছরের শুরুতে উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতি পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি সত্তে¡ও করোনভাইরাস মহামারি ও টাইফুনের কারণে সৃষ্ট খাদ্য সংকট পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার আহŸান জানিয়েছিলেন দেশটির শীর্ষ নেতা কিম জং উন। খরা ও বন্যা দীর্ঘকাল ধরে উত্তর কোরিয়ার জন্য একটি মৌসুমী হুমকি। দেশটিতে সেচ ব্যবস্থা এবং অন্যান্য অবকাঠামোর অভাব রয়েছে। যেকোনো গুরুতর প্রাকৃতিক বিপর্যয় আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় থাকার দেশটির অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিতে পারে। উত্তর কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম রডং সিনমুন জানিয়েছে, সরকারি কর্মকর্তা এবং কোম্পানি ও কারখানার কর্মীরা দেশব্যাপী সেচেরে সরঞ্জাম বিতরণ ও খরাপ্রবণ অঞ্চলে পানিসম্পদের উন্নয়নে কৃষকদের সাথে হাত মিলিয়েছে। এই প্রচেষ্টার লক্ষ্য চলমান শুষ্ক মৌসুম মোকাবিলা এবং আসন্ন খরার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া। সংবাদমাধ্যমটি বলেছে, ‘আগামী খরা থেকে ফসলের ক্ষতি রোধ করার জন্য জনসচেতনতা বাড়াতে এবং সব উপকরণকে একত্রিত করার জন্য পদ্ধতিগত, প্রবল প্রচেষ্টা চলছে।’ মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়ার আবহাওয়া কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহের শুরু পর্যন্ত দেশজুড়ে দীর্ঘায়িত শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করতে পারে। গত মাসে দেশটিতে গড় তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ১ ডিগ্রি ফারেনহাইট, যা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। একই সময় দেশের ৪৪ শতাংশ অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হয়েছে।
রয়টার্স, রডং সিনমুন।